জাতীয়

চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি

আজও উত্তাল সচিবালয়

মুক্তমন রিপোর্ট : ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার প্রতিবাদে টানা তৃতীয়দিনের মত বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশ করছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়।

সোমবার (২৬ মে) সকাল ১০টায় নেতারা নিজেরা মিটিং করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেন। এ সময় চাকরি অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন কর্মচারীরা। এরপর সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবীর ও মহাসচিব নিজাম উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি পুরো সচিবালয় প্রদক্ষিণ করে।

এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের অন্য অংশ। এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন মো. নূরুল ইসলাম এবং মুজাহিদুল ইসলাম।

বিক্ষোভ মিছিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘অবৈধ কালো আইন, বাতিল কর, করতে হবে’, ‘কর্মচারী মানে না, অবৈধ কালো আইন’, ‘মানি না মানবো না, অবৈধ কালো আইন’, ‘এক হও লড়াই কর, ১৮ লাখ কর্মচারী’, ‘সচিবালয়ের কর্মচারী, এক হও এক হও’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’- এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভে অংশ নিতে কাজ রেখে নিচে নেমে এসেছেন। অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ (সংশোধন) ২০২৫ জারি করেছে সরকার। রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় অধ্যাদেশটি জারি করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এতে চার অপরাধের জন্য চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে। অধ্যাদেশটির পুরো নাম হবে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘সরকারি কোনও কর্মচারী যদি এমন কোনও কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন, যার কারণে অন্য যেকোনও সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে, অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে, ছুটি ছাড়া বা কোনও যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন, অন্য যেকোনও কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, যেকোনও সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন– তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।’

দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ বা চাকরি থেকে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত দণ্ড দেওয়া যাবে বলে অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের পর বিক্ষোভ করে আসছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর মধ্যেই অধ্যাদেশ জারি করলো সরকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button