সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে বিমানের সতর্ক পদক্ষেপ

সগীর আহমেদ : সম্প্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং-787-8 ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পতিত হয়, যার প্রকৃত কারণ উৎঘাটনে তদন্ত চলমান রয়েছে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে, বিমানের প্রকৌশল বিভাগ বিমানের সকল বোয়িং-787 ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম- যেমন, ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেম, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন কন্ট্রোল, ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার, হাইড্রোলিক সিস্টেম, এয়ার কন্ডিশনিং, ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম – ইত্যাদির মান যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষাসমূহ পরিচালনা এবং ইঞ্জিনের পাওয়ার অ্যাসুরেন্স চেক সম্পন্ন করার কার্যক্রম শুরু করেছে। উক্ত দুর্ঘটনার তদন্ত শেষে নির্মাতা কোম্পানী বোয়িং কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত যেসকল নির্দেশনা দেয়া হবে, তা সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য বিমানের প্রকৌশল বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে মোট ৬টি বোয়িং-787 ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি বোয়িং-787-8 এবং ২টি বোয়িং-787-9 মডেলের উড়োজাহাজ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড্ডয়ন করে। এই উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম অনুসরণ করে। এই প্রোগ্রামে প্রতিটি মেইনটেন্যান্স টাস্ক, নির্ধারিত সময়সীমা এবং পদ্ধতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে। এটি বোয়িং কোম্পানির মেইনটেন্যান্স প্ল্যানিং ডকুমেন্ট, টাইপ সার্টিফিকেট হোল্ডার এবং রেগুলেটরি রিকোয়্যারমেন্টের নির্দেশনা অনুসারে তৈরি এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কর্তৃক অনুমোদিত।
উল্লিখিত নির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমগুলো নির্ধারিত সময় পর পর এক বা একাধিক টাইপ রেটেড প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে বোয়িং কর্তৃক নির্ধারিত মেইনটেন্যান্স ম্যানুয়াল অনুসরণ করে সম্পন্ন করা হয়। প্রতিটি টাস্ক সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী টাস্ক কার্ডে স্বাক্ষর করেন এবং তা পরবর্তীতে কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স কর্তৃক যাচাই করার পর মেইনটেন্যান্স প্ল্যানিং শাখায় সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়াও, এয়ারক্রাফট হেলথ ম্যানেজমেন্ট এবং ইঞ্জিন হেলথ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে মেইন্টেনেন্স কন্ট্রোল সেন্টার এবং কেন্দ্রীয় প্রকৌশল শাখা প্রতিটি উড়োজাহাজের স্ট্যাটাস সার্বক্ষণিক রিয়েল টাইম মনিটর করে। ফলে, যেকোনো সমস্যা দেখা দেওয়ার আগেই সতর্কতামূলক এলার্ট পাওয়া যায় এবং সে অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সর্বদা যাত্রী নিরাপত্তা ও মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের প্রতিটি ধাপ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সম্পন্ন করে থাকে।