
ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে দাঁড়িয়েছি ছোট্ট একটা কাজে। একটা রং চা হাতে নিলাম। দাম ৬ টাকা। স্টেশন বন্ধ। গত বছরের ৫ আগস্টের পর ভারতের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার কারণে এ স্টেশন বন্ধ হয়ে যায়। এখনো বন্ধই রয়েছে। পাঁচ মিনিটে আমার সামনে অন্তত পাঁচজন ভিক্ষুক আসলো। আমি প্রথম দুজনকে ফিরিয়ে দিয়েছি। পরের তিনজনকে খালি হাতে ফেরাতে পারলাম না। একটা স্টেশন বন্ধ থাকার পরেও এখানে ভিক্ষুকের এত উৎপাত। এটা কি শুধু এখানেই নাকি সারা দেশের চিত্র। অবশ্য ভিক্ষুকের পরিসংখ্যানের উপর দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা খুব একটা বিবেচ্য নয়। কারণ ঢাকা শহরে বেশিরভাগ ভিক্ষুকই পেশাদার ধান্দাবাজ। এরা সচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও এ কাজে নিয়োজিত।
গতকাল পিপিআরসি একটা জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে বলা হয়েছে প্রতি চারজনে একজন দরিদ্র। এবং প্রতিবছর ৩ শতাংশ হার দারিদ্র বাড়ছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা টিসিবি ট্রাকের পেছনে লাইন এবং মানুষের খাদ্যাভ্যাসের যে পরিবর্তন ঘটেছে সেটা বিশ্লেষণ করলে হয়তো এর চেয়েও ভয়াবহ দারিদ্রগত চিত্র ভেসে উঠবে। কারণ এখানে বহু সুপ্ত দারিদ্রতা রয়েছে। যারা হয়তো জরিপকারী সংস্থাকেও নিজেদের প্রকৃত অবস্থা খুলে বলতে পারে না লোক লজ্জার কারণে। যদিও সেটা গোপন রাখা হয়।
অবশ্য ঢাকার রাস্তায় বাইক চালানোর সময় কোন সিগনালে দাঁড়ালেও এটা বোঝা যায়। দেড় মিনিট কোন সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকলে প্রায় ১০ জন ভিক্ষুক চলে আসে।
এদিকে এনসিপি আর বিএনপি’র মধ্যে একটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফকিন্নি শব্দটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে। আসলে যেখানে আমাদের দেশই দরিদ্র। যে দেশের ছয় কোটি মানুষ বা তারও বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে। সেদেশের আবার বড়লোকি কি বা জমিদারিই বা কি?
আরেকটা বিষয় পৃথিবীর যে ১০ টি দেশের মানুষ সবচেয়ে কম মাছ মাংস খায় এরমধ্যে প্রথম স্থানে ভারত দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। ভারত প্রথম স্থান হওয়ার একটা বড় কারণ হচ্ছে নিরামিষ ভোজি।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক। (লেখাটি ফেসবুক পাতা থেকে নেয়া)