
সময় এসেছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর আইন ও প্রক্রিয়া তৈরির ক্ষেত্রে কয়েকটি মূল দিক বিবেচনা করা জরুরি—যাতে সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, এবং একই সঙ্গে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের ভয়, হুমকি বা সহিংসতার মুখে না পড়তে হয়।
এখানে কয়েকটি বিশেষ পয়েন্ট তুলে ধরা হলো:
১. আইনি কাঠামো
স্বাধীন সাংবাদিক সুরক্ষা আইন: একটি আলাদা আইন, যেখানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হুমকি, হয়রানি বা আটক হলে দ্রুত বিচার নিশ্চিতের ধারা থাকবে।
হামলার ক্ষেত্রে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল: সাংবাদিকদের ওপর অপরাধের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ আদালত বা ট্রাইব্যুনাল গঠন।
প্রেস স্বাধীনতার সাংবিধানিক সুরক্ষা: সংবিধানে স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ ও রক্ষার নিশ্চয়তা।
গোপন সূত্র সুরক্ষা আইন: সাংবাদিকের তথ্যের উৎস ফাঁস না করার অধিকার আইনি সুরক্ষা পাওয়া।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কার: যেন এটি মতপ্রকাশ ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা সীমিত না করে, বরং অনলাইন হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেয়।
২. প্রশাসনিক ও প্রক্রিয়াগত সুরক্ষা
হুমকি বা হামলার তাৎক্ষণিক অভিযোগ গ্রহণ ব্যবস্থা: ২৪/৭ হটলাইন, অনলাইন পোর্টাল ও জেলা পর্যায়ে অভিযোগ গ্রহণ সেল।
পুলিশের দ্রুত সাড়া দেওয়ার ইউনিট: সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষায়িত পুলিশ টিম।
ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া: যে সাংবাদিকরা হুমকির মুখে আছেন, তাদের জন্য পূর্বাভাসমূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সংবাদ কভারেজে নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ: মাঠ পর্যায়ে কাজের সময় কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়, তার জন্য প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জাম সরবরাহ।
৩. প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
সচেতনতা কর্মসূচি: প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণকে সাংবাদিকদের ভূমিকা ও তাদের নিরাপত্তার গুরুত্ব বোঝানো।
মিডিয়া হাউসের দায়িত্ব: সাংবাদিকদের বীমা, আইনগত সহায়তা ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম সরবরাহ।
নিয়মিত পর্যালোচনা: সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন কতটা কার্যকর হচ্ছে, তার মূল্যায়ন ও সংস্কার।
৪. আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলা
জাতিসংঘের সাংবাদিক সুরক্ষা নির্দেশিকা (UN Plan of Action on the Safety of Journalists) অনুসরণ।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে তথ্য বিনিময় ও সহায়তা চুক্তি।