মত প্রকাশ

তবু আমরা আশাবাদী, নতুন ভোর আসবেই

বাতেন মোহাম্মদ:
সম্ভবত মির্জা ফখরুল আবার সরকার কে রেসকিউ করতে এগিয়ে আসলেন।।মানুষটাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।

আজকে সারাদিনের রাজনৈতিক নানা ঘটনাবলী এবং সেনাপ্রধানের বক্তব্যের জেরে সরকারের ভিত্তি নড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে বি এনপির যে অংশটি সুযোগ নিতে রাজপথ দখল করেছিলো- মির্জা ফখরুল তাদের বুঝিয়ে নিবৃত্ত করেছে। সরকার এই সিগনালটাকে পজিটিভ হিসাবে নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত।

জাহাজকে মাঝ দরিয়ায় ঝড়ের মাঝে রেখে ক্যাপ্টেন পদত্যাগ করতে চাওয়া- জাহাজকে ডুবিয়ে দেয়ার মতই আত্মঘাতি। মান অভিমান পেছনে রেখে জাতির দিকে তাকিয়েই প্রফেসর ইউনুস সম্ভবত পদত্যাগ করবেন না- প্রত্যাশা রাখি। করা উচিতও হবে না। আর একটা পজিটিভ অগ্রগতি- যেখানে কেউ পাদ দিলেও প্রেস সচিবের ২ হাজার ওয়ার্ডের রচনা চলে আসে- সেখানে এত বড় অনেক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও উনার কোন স্টাটাস এইসব ইস্যুতে না আসা। ফরমায়েশী প্রেস ব্রিফিং ছাড়া – পারসোনাল এজেন্সিতে উনাকে ইন্টারভিন না করতে দেয়া সরকারের জন্য ভালো হবে।অনেক ভুল বুঝাবুঝি তৈরি হয়েছে জনাব শফিকের কারণে।আর না!

তবে মির্জা ফখরুল সহ বি এনপির গুড ফোর্সের তৎপরতাকে উনার সরকারের সম্মান জানানো উচিত। এই ফোর্সকে ডমিনেন্ট হিসাবে রাজনীতিতে প্রাসংগিক রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় এখনি সর্বদলীয় একটা মিটিং ডেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। এতে মির্জা ফখরুল সহ বি এনপির চিন্তাশীল ও ম্যাচিউর অংশ আবার শক্তিশালী ভুমিকা পালনের সুযোগ তৈরি হবে।

মাঠের শক্তি প্রদর্শন- টেবিল ডিস্কাশনে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে। সরকার সেদিকেই যাওয়া উচিত।

দেশটা সবার।মত- দ্বিমত মিলেই দেশ। কিন্ত ক্ষতি হলে সবার হবে। সবকিছুতে একমত হওয়ার দরকার নাই।।কিন্ত গনতান্ত্রিক উত্তরণে যেহেতু নির্বাচনের বিকল্প নাই, তাই একটা নির্বাচনী রোডম্যাপই পারে বর্তমান অনিশ্চিত যাত্রার সামনে একটা কম্পাসের ভূমিকা পালন করতে।

এনসিপির রাজনীতি আরো ক্ষীন হয়ে যাবে। কিন্ত জুলাই অভ্যুত্থানের নায়কদের সমাজে প্রাসংগিক রাখা উচিত। এটা জাতির কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই করা উচিত। সেইক্ষেত্রে প্রফেসর ইউনুস মধ্যস্থতা করে বি এনপির সাথে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, ছাত্রদের সেটা কমিয়ে আনতে পারে। আমার ধারণা প্রফেসর ইউনুসকে বি এনপির চিন্তাশীল অংশ এখনো আস্থায় নিবে।।উনাকে সম্মান করবে।

ছাত্রদের প্রাসংগিক কিভাবে রাখা যায় সেটা নিয়ে পর্দার আড়ালে আলোচনা চলুক। একইসাথে ছাত্ররাও বুঝুক- রাজনীতিতে তারা শিশু। তাদের কৃত রাজনৈতিক ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে– একটা সুন্দর নির্বাচন দেয়ার লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবেই কাজ করা উচিত।

রিফর্ম ডিস্কাশন আবার শুরু হোক। সব রিফর্ম না হোক– অন্তত মৌলিক কিছু রিফর্ম হোক। আমার ধারণা বি এনপিকে আস্থায় নিয়ে, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে- তারা সরকারের সাথে আরো এক্সটেন্ডেড ভাবে কমপ্লাই করবে।

আর ছাত্ররা – শত্রু বানাইয়ো না। একটা পরাজিত পক্ষ তোমাদের শত্রু– সেটাই কি এনাফ না?? তোমরা ভুলের জন্য ক্ষমা চাও।।ভুল করেই তোমরা শিখবে। শুধু রাষ্ট্রের বেসিক পিলার গুলো ডিস্টেবিলাইজ করিও না- কারো উসকানিতে। ডিবেট করো,ডিস্কাশন করো- কিন্ত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি রেস্পেক্ট রাখো।

সালেহউদ্দিন কিংবা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সরকারে আসা লাগে না তাদের নিজেদের গুরুত্ব বুঝাতে।তাদের এক জীবনের যে অর্জন, সেটা তাদের পরের দুইপ্রজন্ম বেচে খেতে পারবে।।তাই কারো উসকানীতে যাকে তাকে টার্গেট করা থেকে বেরিয়ে আসো।

ধারণা করছি- ছাত্ররা প্রফেসর ইউনুসকে কথা দিয়েছে সামনে আর হঠকারী না করার। সম্ভবত ক্ষমা ও চেয়েছে উনার কাছে।।কালকেই কিছু অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে।। কিন্ত যেহেতু তারা আমাদের অভ্যুত্থানের নায়ক তাই তাদের ক্ষমা করে দিয়ে সবাই মিলেই দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাবে- এটাই প্রত্যাশা। তবে আসিফ মাহমুদকে দায়িত্ব কমিয়ে দেয়া উচিত। সে যথেষ্ঠ ব্লান্ডার করেছে।।দেশের অনেকগুলো নৈরাজ্যজনক ইভেন্টের জন্য তার দায় অনেক। আর প্রফেসর ইউনুস যদি আগেই তাকে স্টপ করিয়ে দিতো তাহলে সেনাপ্রধান কিংবা বি এনপির সাথে দূরত্ব এই পর্যায়ে হয়তো আসতো না।

তবুও আমরা আশাবাদী।।নতুন ভোর আসবেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button