অর্থ-বাণিজ্য

সীমা লঙ্ঘনকারীদের দেখা হবে ভিন্নভাবে: এনবিআর চেয়ারম্যান

মুক্তমন রিপোর্ট : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) সম্প্রতি হওয়া আন্দোলনে যারা বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন, তাদের বিষয়ে ভিন্নভাবে দেখা হতে পারে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

সোমবার (৭ জুলাই) রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢাকা কাস্টম হাউস পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। এর আগে, তিনি কাস্টমস হাউসের কাজে স্বচ্ছতা আনতে তিনটি সফটওয়্যার উদ্বোধন করেন।

এনবিআর কর্মকর্তাদের আস্থার সংকট নিরসনে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানতে চাইলে আবদুর রহমান খান বলেন, ‘সেজন্য আজ কর্মকর্তাদের কাছে চলে এলাম। তাদের অভয় দেওয়ার জন্য। প্রত্যেকে যদি দায়িত্বশীল আচরণ করেন, তাদের যে কাজকর্ম সেগুলো যদি তারা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেন; তাহলে আমি মনে করি না তাদের ভয়ের কোনো কারণ আছে।’

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে। তবে সাধারণভাবে আমার মনে হয় না কারও ভয়ের কোনো কারণ আছে।’

এনবিআরের অবসর ও বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে আব্দুর রহমান খান বলেন, কিছু কিছু বিষয় আছে যেগুলো সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এটা সবাইকে বুঝতে হবে। যদি এনবিআর কর্তৃপক্ষের কারণে এসব ঘটতো তাহলে কি মাত্র পাঁচজনের ক্ষেত্রে হতো। আন্দোলনে কি শুধু পাঁচজনে গিয়েছেন? এনবিআর ব্যবস্থা নিলে তো অনেকের বিরুদ্ধেই নিতো। কিন্তু সেরকম কিছু তো ঘটেনি।

আমদানি-রপ্তানিতে শাটডাউন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ছিল সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তবে প্রত্যেকে মিলে চেষ্টা করবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে। রাজস্ব কর্মকর্তারাই রাজস্ব আদায় করবে। এত সমস্যার মধ্যেও কিন্তু কর্মকর্তারাই রাজস্ব আদায় করেছে। সুতরাং রাজস্ব আদায় নিয়ে যে ভয় রয়েছে তা কেটে যাবে। অল্প সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে এতদিন ভিন্ন পদ্ধতিতে শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হতো। সেটি সরাসরি সরকারের কোষাগারে যেতো না। এটাকে পুরোপুরি অনলাইন করা হয়েছে। এখন থেকে অটোমেটেড চালানের মাধ্যমে শুল্ক-কর দেওয়া যাবে। ২৪ ঘণ্টার যেকোনো সময় যেকোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড কিংবা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস থেকে সরাসরি শুল্ক-কর পেমেন্ট করে পণ্য খালাস করা যাবে। এতে করদাতাদের সুবিধা হবে। তাছাড়া রাজস্ব আয়টাও সরাসরি সরকারের কোষাগারে যাবে। বর্তমানে ঢাকা আইসিডি, চট্টগ্রাম ও পানগাঁও কাস্টম হাউজে শুল্ক-কর অনলাইন চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ শুল্ক-কর পরিশোধের কাজ এই চালানোর মধ্যে চলে আসবে।

প্রবাসীরা বিদেশ থেকে ফেরার সময় নানা রকমের ঝামেলা পড়েন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশেষ করে প্রবাসীদের সঙ্গে টুকটাক জিনিসপত্র থাকে। সেগুলো নিয়ে তাদের ঝামেলা পোহাতে হয়। এর থেকে তাদের মুক্ত করতে একটা সফটওয়্যার ডেভেলপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাগেজ রুলসের আওতায় যেসব পণ্য খালাস হবে সেগুলোকে দ্রুত এবং ঝামেলামুক্তভাবে খালাস করা হবে।

এ বছর ব্যাগেজ রুলসে একটা বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, এটি বাস্তবায়নে ব্যাগেজসংক্রান্ত একটা সফটওয়ার চালু করা হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসীরা বিনা ট্যাক্সে বছরে ১০ ভরির মত স্বর্ণ আনতে পারবেন। পাশাপাশি এতদিন প্রবাসীরা বিদেশ থেকে একটা মোবাইল আনলেও কর দিতে হতো। এখন থেকে বছরে একটা মোবাইল বিনা ট্যাক্সে আনতে পারবেন। তবে যারা শ্রম ও জনশক্তি অধিদপ্তরের তথা বিএমইটি কার্ডধারী তারা দুটি মোবাইল আনতে পারবেন। এসব কাজ এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে কাস্টমস হাউজে কিছু জিনিসপত্র আটক করা হয়। যেটাকে ডিটেনশন বলে। এই ডিটেনশন মেমোকেও অটোমেটেড করা হয়েছে। যেন আটক পণ্য কীভাবে অ্যাসেসমেন্ট করা হয়েছে সেসব তথ্য যথাযথভাবে সংরক্ষিত থাকে। সেজন্য একটা সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button