বৃহত্তর উত্তরা

তুরাগে জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষে পুলিশ-নারী-শিশুসহ আহত ৯

মুক্তমন ডেস্ক : রাজধানীর তুরাগে জমি দখলকে কেন্দ্র করে বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ সদস্য, নারী, শিশু ও পুরুষসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত এক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার বিকেলে তুরাগ থানার দিয়াবাড়ি এলাকার মেট্রোরেল উত্তর স্টেশন সংলগ্ন মোড়ল বাড়িতে।

ঘটনার পরপরই তুরাগ থানা পুলিশ ও দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখান থেকে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আহতরা হলেন—তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজ আল মামুন, মোড়ল বাড়ির মালিক ইয়াকুব আলী মোড়লের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন (৫৫), ছোট ছেলে আহমেদ নাঈম (২০), নাঈমের স্ত্রী নাঈমা সুলতানা পিংকি (২৫), তাদের নয় মাস বয়সী কন্যা মোছা. খাদিজা, চাচা আবুল কাশেম (৪২), মোস্তফা মোড়ল (৫০), ভাবি সায়মা কবীর তমা (২৭) এবং ভাড়াটে শিশু সালমান (৯)।

তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাহাত খান বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’

আহত আহমেদ নাঈম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১২ সালে বাবা গোপনে বাড়ির সামনে ১৮ কাঠা জমি বিক্রি করেন। ২০২৩ সালে হঠাৎ করে একদল লোক জমিটি দখলে নিতে আসে। পরে থানায় গেলে জানতে পারি, জমিটি এডিসন গ্রুপ ১ কোটি ৫০ লাখ টাকায় কিনেছে। এরপর আমরা জমির বিপরীতে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তাব দিই।’

নাঈম আরও বলেন, ‘বিনা নোটিশে ও কোনো সাইনবোর্ড ছাড়াই তারা জমি দখল করতে এলে তৎকালীন তুরাগ থানার ওসি মওদুদ স্যার আদালতে যেতে বলেন। আমরাও বলেছিলাম, আদালতের রায় মেনে নেব। কিন্তু আজ হঠাৎ এডিসন গ্রুপের লোকজন ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশের উপস্থিতিতেই ভাঙচুর চালানো হয়, এমনকি বাড়ির বাইরের সিসি ক্যামেরাও খুলে নিয়ে যায়।’

নাঈম অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা বস্তায় বস্তায় ইট-পাটকেল এনে হামলা চালায়। একপর্যায়ে আমরা কেসি গেট লাগিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকলেও গেটের তালা ভেঙে মা-বোনদের উপর হামলা করে। এ সময় এসআই মামুন স্যারও আহত হন।’

মোড়ল পরিবারের বড় ছেলে দোস্ত মোহাম্মদ নবীন বলেন, ‘আমাদের বাবা কবীর আহমেদ নামে একজনের কাছে জমি বিক্রি করেন। পরে কবীর জমিটি এডিসন গ্রুপের কাছে বিক্রি করে দেন। আমরা এডিসন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদের সঙ্গে বসে টাকা পরিশোধের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি। তিনিও রাজি ছিলেন। কিন্তু এর মাঝেই তারা আমাদের আওয়ামী লীগ সমর্থক বলে ট্যাগ দিয়ে হান্নান নামে ম্যানেজার ও কথিত মানবাধিকারকর্মী আরাফাত ইবনে নাসির সন্ত্রাসী নিয়ে হামলা চালায়। এর আগেও নাসির আমাদের কাছে টাকা দাবি করেছিল। আমরা রাজি না হওয়ায় এই হামলা হয়েছে।’

ঘটনাস্থল থেকে আটক হওয়া দুজনের মধ্যে একজন এডিসন গ্রুপের ম্যানেজার হান্নান বলে জানিয়েছে পুলিশ। থানার এসআই আজিজ আল-মামুন বলেন, ‘৯৯৯-এর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলা প্রতিহতের চেষ্টা করি। এ সময় আমিও আঘাত পাই।’ ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button