বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

মুক্তমন ডেস্ক : বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপের এটিএম শামসুল হক মিলনায়তনে ‘সেন্টার ফর এডভান্সড স্টাডিজ এন্ড থটস’ (CAST) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নির্বাচন পদ্ধতি: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজিত হয়। এতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এসবিই ফ্যাকাল্টির ডিন ড. একেএম ওয়ারেসুল করিম একটি রিসার্চ পেপার উপস্থাপন করে দেখান, ফ্যাসিবাদ রোধে এফপিটিপি কার্যকর নয়। এক্ষেত্রে তিনি ভারতে বিজেপির উত্থান এবং বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের উদাহরণ দেখান। তাছাড়া এফপিটিপি নির্বাচনে যেসব ভোট হারিয়ে যায় সেগুলো যথাযথ মূল্যায়নের জন্যও পিআর ব্যবস্থা প্রয়োজন। তবে তিনি পিওর পিআর ব্যবস্থার প্রস্তাবনা না করে মিক্সড প্রপোর্শনাল সিস্টেমের প্রস্তাবনা করেন যেখানে সংসদের অর্ধেক আসনে পিআর এবং বাকি অর্ধেক আসনে এফপিটিপি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোঃ তাহের বলেন, এতদিন ধরে চালু এফপিটিপি নির্বাচনী ব্যবস্থায় যেহেতু ভালো কিছু আসে নি, তাই আমাদের এখন নতুন নির্বাচনী ব্যবস্থা পরখ করে দেখা উচিত। তবে তিনি বলেন, যদি সমাজের নৈতিক মান উন্নয়ন না করা যায় তবে কোন নির্বাচনী ব্যবস্থাই কার্যকর হতে পারে না। তবে বৈঠকে উপস্থিত অনেকেই পিআর ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পরাজিত শক্তি পিআর ব্যবহার করে ফিরে আসতে পারে কিংবা কোন ক্ষুদ্র গোষ্ঠী দেশ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর প্রস্তাবনা সংসদে নিয়ে আসতে পারেন।
পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, এতদিনকার গতানুগতিক নির্বাচন ব্যবস্থা থেকে যে বের হতে হবে সে ব্যাপারে দেশব্যাপী একটি ঐক্যমত্য তৈরী হলেও, নির্বাচন ব্যবস্থা কিরকম হওয়া উচিত তা নিয়ে এখনো মতভেদ দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, পিআর এর বিরোধিতাকারী বড় একটি দল তাদের বিরোধিতার পক্ষে কোন শক্ত যুক্তি দেখাতে পারে নি। তাই সামনের নির্বাচনে একটি সমঝোতাস্বরূপ নিম্নকক্ষে এফপিটিপি মেনে নেয়া গেলেও উচ্চকক্ষে অবশ্যই পিআর ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনগুলোতে পিআর ব্যবস্থার ব্যাপারে দলটিকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
দুদক সংস্কার কমিশনে বিপ্লবী ছাত্রদের প্রতিনিধি ড. মুনিম মোবাশ্বির বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্যই জুলাই বিপ্লব হয়েছে অথচ দেশের একটি বড় দল নির্বাচন ও সংস্কারকে মুখোমুখি করে দিয়েছে। পরাজিত শক্তি আওয়ামী লীগ যেমন এতবছর ৭১ এর চেতনা ব্যবসা করেছে, ২৪-এর বিপ্লবকে কেন্দ্র করেও কাউকে ব্যবসা করতে দেয়া যাবে না। কাউকে মাস্টারমাইন্ড বলে ফোকাস করা যাবে না।
বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. যুবাইর এহসানুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, গবেষক ও কলামিস্ট শাহ আবদুল হালিম প্রমূখ।