আশিক চৌধুরির কাজ বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরী করা, বিনিয়োগ আনা নয়

মাইনুল হক মাহি : আশিক ভাই মূলত চিটাগং পোর্টকে উন্নত করতে চাইছে। কিন্তু সেটা করতে গেলে, গতানুগতিক সিন্ডিকেশন আর থাকে না।
আমি বেশ কয়দিন আগে AP Mollar এর ইনভেস্টমেন্ট হওয়ার আলোচনা নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করছিলাম। ৮০০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট মূলত কি কাজে ব্যয় হতো?
১. পোর্ট এর এফিসিয়েন্সি বাড়ানোর জন্য।
২. চিটাগং এ ফ্রি ট্রেড জোন করা হতো।
FTZ হচ্ছে মূলত বিদেশি কোম্পানিকে আমাদের দেশের ল্যান্ড শুল্ক মুক্তভাবে ব্যবহার করতে দেয়া। এবং FTZ অ্যানাউন্স করলেই হবে না, বাংলাদেশের পোর্ট এর এফিসিয়েন্সি বাড়াতে হবে।
এই মুহূর্তে চিটাগং পোর্ট ৮০% অকুপাই হয়ে থাকে।
শিপ পর্যন্ত যেতে সময় লাগে ২২-২৫ দিন। কনজেশন, ব্যাড ম্যানেজমেন্ট, সিন্ডিকেশন সব মিলিয়ে এখানে বিশাল একটা ব্যাড ইকোসিস্টেম হয়ে আছে।
অনেকে বলতেছেন, আশিক চৌধুরী কি করতেছে; আশিক চৌধুরী ট্রাই করতেছে যেসব কারণে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বাধাগ্রস্ত হয়। সেগুলোর নট খোলার জন্য।
আপনি চিন্তা করেন; AP Mollar & Maersk ৮০০ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট করলে কি হবে?
পোর্ট অকুপেন্সি ৬০% এর নিচে নেমে আসবে।
গেট টু শিপ ট্রান্সফার টাইম ২২ দিন থেকে ৯ দিনে।
মানে আপনি মোটাদাগে ১২-১৫ দিন সময় বাঁচিয়ে ফেলতেছেন। এতে আপনার দেশের বাইরে পণ্য রপ্তানি করতে কত ইজি হবে।
আপনাকে জাস্ট একটা উদাহরণ দেই, আমাদের কোম্প্যারাবেল কম্পিটিটর হচ্ছে ভিয়েতনাম। আমাদের কাছে টাকা না আসলে সাধারণত ভিয়েতনামে সেই টাকা চলে যায়, গার্মেন্টস অর্ডারও।
ভিয়েতনামের Cai Mep- Thai Vai পোর্ট এর লোডিং লিড টাইম ১১ দিন+; আমাদের এখনকার থেকে অর্ধেক সময় লাগে। যখনই বাইরের ইনভেস্টর বাংলাদেশকে অপসন হিসেবে দেখে, কমপারিটিভ এনালাইসিস এ ভিয়েতনাম থাকে। চিন্তা করে দেখেন, কত বড় রেড ফ্ল্যাগ আমাদের জন্য ফরেন ইনভেস্টমেন্ট এর ক্ষেত্রে। এই জায়গায়ই অনেক ইনভেস্টর বাংলাদেশকে কাট করে দেয়।
সমস্যা হইলো, কারেন্ট সিন্ডিকেট এটা চায় না। কারণ কনজেশান এর উপর তাদের ইনকাম। এটাকে কন্ট্রোল করতে পারা বলে কথা। বাংলাদেশের বিজনেস গেট হচ্ছে চিটাগং পোর্ট। এটাকে কন্ট্রোল করে পয়সাতে কমিশন খাইলেও হাজার খানেক কোটি হয়।
এবং আমাদের সরকার প্লাস আশিক চৌধুরী এটা নিয়ে লাস্ট কয়দিন ধরে ব্যাপক কাজ ধরেছে, স্ট্রাকচার করার জন্য, যে কারণে একটা মহল এখন পোর্ট এর গ্রিপ ছুটে যাচ্ছে দেখে, নেগেটিভ ক্যাম্পেইন স্টার্ট করেছে, বলার চেষ্টা করছে, আশিক চৌধুরী শুধু প্রেজেন্টেশন দিতে জানে, আসল কাজ না।
কিন্তু, আশিক যে ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এর চেয়ারম্যান; ওনার কাজ ইনভেস্টমেন্ট আনা না, ওনার কাজ ইনভেস্টমেন্ট আনার জন্য যে পরিবেশ তৈরি করা দরকার সেটাই তিনি করছেন।