দিল্লির লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ: নিহত ১০, আহত ৩০

বিস্ফোরণের ঘটনাপ্রবাহ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ একটি বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে
আশপাশের গাড়ি ও অটো রিকশাগুলোতে।
এক দোকানদার বলেন, “একটা গাড়ি সিগনালে দাঁড়িয়েছিল। হঠাৎই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়। আমরা ধোঁয়ার ভেতর থেকে আর্তচিৎকার শুনতে পাই।”
আগুনে ছয়টি গাড়ি ও তিনটি অটো রিকশা পুড়ে যায়।
লাল কেল্লা, চান্দনি চক ও জামে মসজিদ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিস্ফোরণের পরপরই দিল্লি ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট ও এনডিআরএফ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
দিল্লি পুলিশের কমিশনার সতীস গোলছা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলেই আটজনের মৃত্যু হয়,
পরে হাসপাতালে আরও দুইজন মারা যান। আহতদের মধ্যে অন্তত ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নিহতদের অধিকাংশই পথচারী ও অটো রিকশাচালক।
বিস্ফোরণের সময় গাড়ির ভেতরে থাকা দুজনের দেহ সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, যাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
তদন্ত ও সরকারি প্রতিক্রিয়া
ভারতের গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন,
“আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি। এটি কোনো দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হামলা — তা জানতে তদন্ত চলছে।
প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরকের উপস্থিতির নমুনা পাওয়া গেছে।”
দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেল, এনআইএ ও ফরেনসিক টিম যৌথভাবে
ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে,
বিস্ফোরণটি গাড়ির ভেতরে লুকানো ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (IED) থেকে ঘটেছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী,
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী
অরবিন্দ কেজরিওয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
কেজরিওয়াল এক্স (টুইটার)-এ লিখেছেন,
“এই হামলা দিল্লির শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর এক নির্মম আঘাত। প্রশাসনকে অনুরোধ করছি দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে।”
ঘটনার পর নয়াদিল্লি ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিমানবন্দর, রেলস্টেশন ও মেট্রো নেটওয়ার্কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
লাল কেল্লা ভারতের জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক। প্রতি বছর এখান থেকেই স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
তাই এই এলাকায় যে কোনো হামলা বা বিস্ফোরণ ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে উচ্চমাত্রার সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বর্তমান অবস্থা
- ঘटनাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল।
- আহতদের দিল্লি এআইআইএমএস ও লোকনায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
- এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
- কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা RAW ও IB অন্যান্য রাজ্যে সতর্কতা জারি করেছে।
সূত্র: AP News, Reuters, India Today, Economic Times, Hindustan Times