আইন-অপরাধ

নিউইয়র্কে বারী হোমসের মালিক আসেফ বারী টুটুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

নিঃস্ব প্রবাসী রোকসানা ও আজাদ দম্পাতি দিলেন আত্মহত্যার হুমকি

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি : আমেরিকায় নিউইয়র্কে বারী হোমসের মালিক আসেফ বারী টুটুলের বিরুদ্ধে প্রতারণা অভিযোগ করেছেন এক বাংলাদেশী প্রবাসী দম্পতি। প্রবাসের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী রোকসানা মির্জা ও তার স্বামী রিয়েলটর আজাদ নিঃস্ব হয়েছেন বলে অভিযোগ টুটুলের বিরুদ্ধে। গত শনিবার কুইন্স প্যালেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িয়ে কাঁদলেন তারা। দাবি জানালেন পাওনা সাড়ে ৬ লাখ ডলার উদ্ধারের। তাদের পারিবারিক, সামাজিক ,ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক দুঃসময়ের চিত্র তুলে ধরেন। দুর্দশা না মিটলে আত্মহত্যার হুমকি দেন তারা।

উভয়েই কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আসেফ বারী টুটুলের সাথে কাজ করতে গিয়ে আমরা নিঃশেষ হয়ে গিয়েছি। তার কারণে হারিয়ে ফেলেছি ব্যবসা ও সুনাম। আমাদের সাড়ে ৬ লাখ ডলার আটকে দেয়ায় আমাদের বসবাসের একমাত্র বাড়িটি পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে চলে গেছে।

রোকসানা মির্জা বলেন, আমার গয়না বিক্রি করে বাড়ির কাজের যোগান দিয়েছি। আজাদ বলেন, অর্থ কষ্টের যন্ত্রণায় মাঝে মাঝে মনে হয় ১৪ তলা ভবনের উপরে উঠে লাফ দেই। এ জীবন আর বহন করতে পারছি না। গত শনিবার কুইন্স প্যালেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ভাবেই কথা বলছিলেন।

রিয়েলটর ও কন্সট্রাকশন কন্ট্রাকটর আজাদ বলেন, ২০২১ সালে বারি হোম কেয়ারের মালিক আসেফ বারি টুটুলের ব্রংকস ও ব্রুকলিনের চার্চম্যাকডোনাল্ডস্থ দুটি ভবনের কাজ করি। সবমিলে আমি তার কাছে সাড়ে ৬ লাখ ডলার পাই। শতাধিকবার এই অর্থ চেয়ে তা পাইনি। আজ বা কাল দেই বলে ৪টি বছর পার করেছে। আমি নিজে ও কমিউনিটির লোকজন নিয়ে গিয়ে অর্থ চেয়েছি। হজ্ব থেকে ফিরে এসে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন। নমি ভাই ও হারুন ভাই সহ অনেকেই সাক্ষি রয়েছেন। এরপরও ২টি বছর পার হয়েছে শুধু আশ্বাসে।

আজাদ বলেন, আমার পাওনা আটকে দিয়েই বারি ক্ষ্যান্ত হননি। তিনি ২০২৩ সালে সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে বিষোদাগার করেছেন। এতে আমার ব্যবসা ও সুনামের ক্ষতি হয়েছে। তার কারণেই আমার ব্যবসার ধ্বস নেমেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আজাদ বলেন, অর্থের দাবি নিয়ে আদালতে মামলা করেছিলাম। ১ বছরে এ জন্য ব্যয় হয়েছে ৭০ হাজার ডলার। এটর্নি দ্বিতীয় বছরে আরও ২০ হাজার ডলার দাবি করে। আমি ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব। মামলা চালানোর মতো কোন সামর্থ্য আমার নেই। এমতাবস্থায় আইনি লড়াইটাও চালিয়ে যেতে পারলাম না।

‘বারির বিরুদ্ধে পোষ্টার ও ব্যানার ছাপিয়ে প্রচার করছেন। পোষ্টারটি দেখতেও আপত্তিকর। কমিউনিটির একজন সদস্যের বিরুদ্ধে এমন প্রচারণা সমুচিত ও শালীনতার মধ্যে পড়ে কি?’ জানতে চাইলে আজাদ বলেন, অবশ্যই এমন পোষ্টার করা ঠিক হয়নি। আমি এ জন্য দুঃখিত। কিন্তু এমন কিছু করতে বারি বাধ্য করেছেন। সে আমাকে পথে বসিয়েছেন। আমি আমার স্ত্রীর জমানো অর্থ ও গয়না বিক্রি করে বারির কাজ করেছি। আর সে সব টাকা আটকে দিয়েছে। আমার বাড়ি হারিয়েছি। সংসার ভাংগার উপক্রম হয়েছিল। আমি মাঝেমধ্যে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি অভাবের তাড়নায়। এর জন্য বারিই দায়ী। আবেগে তার বিরুদ্ধে পোষ্টার ছাপিয়েছি। তবে আবারও বলছি, যতদিন আমার টাকা না পাবো, আমি প্রতিবাদ করতেই থাকবো। রাস্তায় মাইক হাতে নিয়ে চিৎকারে করে আমার পাওনা চাইবো। বলবো বারি আমার টাকা দাও। আমার পাওনা দিয়ে দিলেই আর কোন অভিযোগ নেই। আমার দাবি একটাই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button