ক্যাম্পাস

এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের ২ শিক্ষার্থী

  • অবহেলার অভিযোগে এক শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

  • টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন বিক্রির অভিযোগ স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে

  • জড়িত থাকার অভিযোগ গভর্নিংবডির সভাপতি, অধ্যক্ষ এবং কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে

মুক্তমন রিপোর্ট : উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে আজ এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারার অভিযোগ জানিয়েছে দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার। ভুক্তভোগী ওই দুই শিক্ষার্থীর নাম ইয়াসির আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন। তারা দুজনই মানবিক বিভাগের ছাত্র।

এ বিষয়ে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ডিএনসিসি অঞ্চল-১০ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে যে শিক্ষক দায়িত্বে ছিলেন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এডমিট কার্ড না দেয়ায় তারা আজ পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারে নাই।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কলেজের সামনে বসে কান্নাকাটি করছে ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।

এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত জানায়, গতকাল এডমিট কার্ড দেয়ার কথা ছিলো, বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত প্রিন্সিপাল (ইভানা তালুকদার)ম্যাডাম আমাদেরকে কলেজে এনে বসিয়ে রেখেছে। পরে বলছে সকালে কলেজে এসে এডমিট কার্ড নিও।

তাদের অভিযোগ, যাওয়ার সময় ম্যাডাম তাদেরকে আরো বলছেন এডমিট কার্ড না পাওয়ার কথা কাউকে যেন না বলি। যদি বলি তাহলে আমাদেরকে পরীক্ষা দিতে দিবে না।

উত্তরা হাইস্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের অনিয়মের অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেনের বাবা আবদুল গফুর অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে এখানে দীর্ঘদিন লেখাপড়া করে, ছেলের রোল ১০৯১। কিন্তু, তারা আমার ছেলের রোল দিয়েছে ২০৯২। তিনি আরো বলেন, উনারা টাকা খেয়ে আমার ছেলের রোলে অন্যজনকে ঢুকিয়ে দিয়েছে।

পরীক্ষা দিতে না পেরে হতাশ ওই শিক্ষার্থীর বাবা আরও বলেন, গতকাল রাতেও আমরা কলেজে আসছি। প্রিন্সিপাল ম্যাডাম আমাদেরকে আশ্বাস দিয়ে বলেছেন যে, সকালে এডমিট কার্ড দিবে। কিন্তু আমরা পাইনি। উনারা এখন ফোন ধরতেছে না। আমার ছেলের জীবন নিয়ে এরা ছিনিমিনি খেলেছে। আমি এর বিচার চাই। উনারা টাকা খেয়ে আমার ছেলের রোল অন্য জায়গা এরা বিক্রি করে দিছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেনের মা বিলকিস বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছেলের জীবন নষ্ট হতে যাচ্ছে। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সকাল থেকে কলেজের গেটে আমি দাঁড়িয়ে আছি। কর্তৃপক্ষের কেউ দেখাও করে নাই, ফোনও ধরছে না।

বিষয়টির সত্যতা জানতে উত্তরা হাই স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইভানা তালুকদারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, বিষয়টি তদন্ত করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের দুই শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারার পেছনে যাদের গাফিলতি রয়েছে সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গাফিলতি থাকে তবে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কোন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি বার বার এড়িয়ে যান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button