
মাইলষ্টোন স্কুলে ফাইটার বিমানের ব্ল্যাক বক্স স্পেশালিষ্টদের জ্বালায় ভাবতেছি কিছু লিখি।
ফ্লাইট সেইফটি অথবা এক্সিডেন্স ইনভেষ্টিগেশন নিয়ে সবাই বেশ ভাল করছেন যে যার মতন লজিক দাঁড় করাচ্ছেন।
একজন বলেন ব্ল্যাক বক্স লইয়া বিমান বাহিনী ছিনি মিনি খেলতেছে আরেকজন সাংবাদিক এই টার মধ্যে ষড়যন্ত্র খুঁজতেছে।
একটু বলে রাখি
★যেকোন বিমান দুর্ঘটনার পুর্ন তদন্ত পেতে মিনিমাম ০৩ মাস লাগে।
প্রাথমিক তদন্ত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পাওয়া যায় – প্রাথমিক তদন্তে সাধারণত পাইলটের ইতিহাস আবহাওয়া – বিমানের ইতিহাস- প্রত্যক্ষ দর্শীদের সনাক্ত করন সি সি টিবভি ফুটেজ এইসব খুটি নাটি জব্দ করা হয়।
কনভেনশনাল ফাইটার জেটে কোন আধুনিক সিভিল এয়ার লাইন্সের মতন ব্ল্যাক বক্স অথবা ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার থাকে না বা আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে এইটা বাধ্যকতা মুলক না নিরাপত্তার কারনে।
ধরেন ফাইটার জেট টি শত্রু ভুমিতে অবতরন অথবা ক্রাশ করেছে তখন এই ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার শত্রু পক্ষ ইউজ করে অনেক সিক্রেট তথ্য পেয়ে যাবে – যেমন ফাইটারের ডিজাইন পারফরম্যান্স পাইলটের দক্ষতা আরো অনেক কিছু।
তবে শান্তিকালীন সময়ে অপারেশন এর সময় অপশন থাকতে পারে তাও লিমিটেড।
মাস খানেক আগে ভারতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে একটা বৃটশ ০৫ ম জেনারেশন F35 ফাইটার জেট অবতরণ করে।
সেই ফাইটার টি কে পাইলট ২৪/৭ প্রথমে পাহারা দেয় যেন কোন ভারতীয় কতৃপক্ষ এর কোন কিছুতে হাত না দেয় আরো অনেক কাহিনী – এর কয়েক ঘন্টা পর বৃটিশ বিমান বাহিনী সমস্ত সাপোর্ট পাঠায় এমন কি নিজেদের নিরাপত্তা ইউনিট ও।
অনেক চেষ্টা করেও ঠিক করতে না পেরে পুরো ফাইটার টিকে খুলে নিয়ে আসার পরিকল্পনাও করা হয় বৃটিশ সরকার কিন্তু ভারতীয় দের হাতই দিতে দেয় নাই।
সদ্য ক্রাশ হওয়া বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ফাইটার টিতে কাষ্টমাইজ সল্প পরিধির ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার ছিলো যেটার কাজ সামান্য কিছু প্যারামিটার রেকর্ড করা। অনেক সময় ফাইটার জেট গুলোর কম্বেট পারফরম্যান্স ইভালুয়েট করতে এই ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডারের তথ্য ইউজ করা হয় দুর্ঘটনা তদন্তে খুব একটা কাজে আসে না।
ভয়েজ রেকর্ডার তো থাকেই না এইসব ফাইটারে।
আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশনের আইন অনুযায়ী যেসব বিমান যাত্রী বহন করে সেইসব বিমানে এইসব যন্ত্র থাকে।
আবার কত যাত্রী সেই বিমানের কত ওজন এইসব বিবেচনা করে এর রেকর্ড টাইম ঠিক করা হয় ।
যেমন কোথায় বলা আছে মিনিমাম ৩০ মিনিট ভয়েজ রেকর্ড আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৪০ ঘন্টার ডাটা রেকর্ড যা বিস্তর আলোচনার প্রয়োজন।
সাংবাদিক ইলিয়াস কে দেখলাম এই নিয়ে লিখেছেন – বিমান বাহিনীর মাইলষ্টোন স্কুলের সি সি টিভি ফুটেজ নিয়ে গিয়েছে এবং কাউকে দিচ্ছে না -উনি হয়তো জানেনই না এই সব ফুটেজ বিমান দুর্ঘটনার আলামত হিসেবে নেয়া হয় সেইখান থেকে বিমানটির গতি, ইম্পেক্ট এংগেল, ফ্লাইট কন্ডিশন, ইমপেক্টের আগে বিমান টি কি অবস্থায় ছিলো এইসব নির্নয় করতেই এভিডেন্স হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে ।
তিনি এই ভিডিও ফুটেজ কেন প্রকাশ হচ্ছে না বা গোপন রাখা হয়েছে এটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
এটা আসলে ঠিক না – এভাবেই তদন্ত হয়।
এমনও হতে পারে সেই সব ফুটেজে কিছু করুন দৃশ্য আছে যা নেয়া কঠিন হবে।
অথবা এভিডেন্স পাব্লিক হলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে।
মিলিটারী ফাইটার জেটের ব্ল্যাক বক্স অথবা ভয়েজ রেকর্ডার নিয়ে কেহ কেহ অভিজ্ঞতার অভাবে শুধু শুধু বিতর্ক ছড়াচ্ছেন নাকি শুধু ভিউ ব্যাবসাই মুল কারন সেইটা আপনারা খুব ভাল জানেন।
ধন্যবাদ।