ফেনী জেলার দাগন ভূঞা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ বাণিজ্য চরমে

ফেনী জেলা থেকে ঘুরে এসে ফরহাদ আহমেদের, বিশেষ প্রতিবেদনঃ ফেনী জেলার দাগন ভূঞা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এক ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর এই অফিসে নতুন সাব-রেজিস্টার হিসেবে যোগদান করেন আকিল উদ্দিন। তবে বিস্ময়করভাবে, ২০২৫ সালের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত অফিস কক্ষের কর্মকর্তাদের তালিকায় তার নাম নেই। তালিকায় এখনো সাবেক সাব-রেজিস্টার মনজুরুল আলমের নামই প্রদর্শিত হচ্ছে।
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং তারিখে একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন—“দাগনভূঞা সাব-রেজিস্টার অফিসে প্রকাশ্যে চলছে ঘুষ বাণিজ্য”। তাতে প্রকাশ পায়, কিভাবে একই রুমে বসে সাব-রেজিস্টার দলিল সম্পাদন করেন, ঠিক একই রুমে বসে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী ঘুষ আদায় করেন।শুধু তাই নয় জানা যায় যখন যে সাব-রেজিস্টার নিয়োগ পেয়ে আসে আইনের গেঁড়া কলে ফেলে প্রতি সপ্তাহে এই অফিস থেকে ২-৩ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় করে যার বাহক হিসেবে কাজ করছেন অফিসের কেরানী নছের উদ্দীন।
সিন্ডিকেটের অদৃশ্য ছত্র ছায়ায় অফিসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দাগনভূঞা সাব-রেজিস্টার আকিল উদ্দিনের প্রত্যক্ষ মদদে অফিসে একটি দুর্নীতিপূর্ণ সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এতে জড়িত রয়েছে—নোমান আবু সাইদ (সায়েম) – অফিস সহকারী,নছের উদ্দীন – কেরানী,স্বপন (আমিন) – দলিল লেখক,ফরিদ উদ্দীন – সহ-সভাপতি এবং স্থানীয় কিছু দলিল লেখক ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ।
এ পরিস্থিতিতে অনেক নিরীহ দলিল লেখক মুখ খুলতে নারাজ। তারা জানাচ্ছেন, লাইসেন্স বাতিল হওয়ার ভয়ে তাদের চুপ থাকতে বাধ্য করছে একটি প্রভাবশালী মহল। প্রতিবেদন প্রকাশ বন্ধ করতে সাংবাদিককে আর্থিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
রেজিস্ট্রারদের চাপ ও হুমকি দিয়ে আসছে সিন্ডিকেটের আরো একটি প্রভাবশালী চক্র।
জেলা রেজিস্ট্রার সালাউদ্দীন সাহেব একাধিকবার আকিল উদ্দিনকে ফোন করে সাংবাদিকের সঙ্গে ‘মীমাংসা’ করে নিতে বলেন। জানা গেছে, আপস না হলে সাংবাদিককে হয়রানির শিকার হতে হবে—এমন হুমকিও দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক জনাব সাইফুল ইসলাম বিষয়টি তার এখতিয়ারে নয় বলে জানিয়ে, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রশ্ন রয়ে যায়: সরকারি কর্মকর্তা হয়েও আকিল উদ্দিন কেন নিজ নাম প্রকাশে আগ্রহী নন? কী কারণে বোর্ডে তার নাম যুক্ত হয়নি এতদিনেও? কারা রক্ষা করছে এ দুর্নীতির সিন্ডিকেটকে? প্রশ্ন জনমনে।