নির্বাচন

বিএনপির এমপি মনোনয়ন পেতে ১০ বিষয়ে টিক মার্ক লাগবে

ইব্রাহিম সরকার, ঢাকা : আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশান অফিসে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আনাগোনা বেড়েছে কয়েক গুন। অনেকে লন্ডনে গিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাক্ষাত পেতেও তদবির করছেন অনেক প্রার্থী।

নির্বাচনের রোডম্যাপ যতই ঘনিয়ে আসছে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হাই লেভেল থেকে তদবির করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এই সুযোগে দলের মধ্যম সারির কয়েকজন অসাধু নেতা মনোনয়ন পেতে সুপারিশ করিয়ে দিবে বলে প্রতারনা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

রাজশাহী ৫ আসন থেকে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে ১১ জন। এই আসনের জুনিয়র নেতা এবং মনোনয়ন দৌড়ে পিছিয়ে থাকা এক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর সাথে কথা হয়। তিনি বলেন ঢাকার মধ্যম সারির একজন নেতা তাকে জানায় মনোনয়ন পেতে স্থায়ী কমিটির এক সদস্য দিয়ে তদবির করিয়ে দিবে।

এজন্য মধ্যম সারির নেতা ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। বিষয়টি প্রতারণা ভেবে সুপারিশের বিষয়ে রাজী হননি তিনি। এমনভাবে ভূয়া তদবিরের নামে এমন চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই চক্রের ফাঁদে অনেকে পা দিয়ে খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

এসব বিষয়ে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন তদবির ভূয়া বা সঠিক হোক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নমিনেশন পাওয়া সম্ভব না। অনেকে নিজ নিজ আসনে প্রচার করে বেড়ায় তাকে গ্রীন সিগন্যাল দেয়া হয়েছে। এসব কথা সর্বৈব মিথ্যা কথা। এমপি নমিনেশন পেতে হলে ১০ টি বিষয়ে যাচাই বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হলেই মিলবে বিএনপির নমিনেশন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব বিষয়ে খুব নিখুঁত ভাবে কাজ করতেছে। তবে ১০ বিষয়ে টিক মার্ক ছাড়াও দলের ত্যাগী উচ্চ শিক্ষিত মার্জিত তরুণদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

যে সকল বিষয় নিয়ে যাচাই বাছাই করা হবে ১.বিগত সরকারের সময়ে যারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তারা অযোগ্য হবেন। বিএনপির যে সকল নেতৃবৃন্দ সুযোগ থাকার পরও কোন সুবিধা গ্রহন করে নাই। ২.যারা বিগত সরকারের সমর্থক কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রত্যেক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেনি। ৩.দেখা হবে আন্দোলন সংগ্রামে কতটুকু অবদান। হামলা মামলা জেল জুলুমের শিকারের মাত্রা কতটুকু। জেল জুলুমের শিকার। ৪.নিজ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্যাতন বা জুলুম করেছিল এমন কোন ক্ষতিয়ান নাই। সামান্যতম জড়িত ছিল না। ৫. দলের দূঃসময়ে নিজ কর্মিদের প্রতি সদাচরণ, সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত ছিল ও ব্যবহারে নম্র ভদ্র আচরনের ব্যক্তি। ৬.মাদকাসক্ত বা নারী কেলেংকারীতে জড়িত নন ব্যক্তি হতে হবে। ৭.বর্তমান সরকারের সময়ে চাঁদাবাজি দখল বানিজ্য জড়িত নন। ৮, কমিটি দেওয়ার সময় পদ বাণিজ্যের সাথে জড়িত নন। ৯. ধর্মীয় সংখ্যা লঘু ও ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর প্রতি কোনরূপ অসদাচরণে জড়িত নন। ১০. গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র বা দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত নন এমন নেতানেতৃদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে একটি সেল গোপনে যাচাই যাচাইয়ের কাজ অব্যাহত রয়েছে। জরিপের কাজ শেষ হলে সকল তথ্য কম্পিউটার ডাটাবেজ করা হবে।

ভূল তথ্য দিয়ে বা তদবির করে দলের মনোনয়ন পাওয়া কিছুতেই সম্ভব হবে না। ১৮ বছরের আগের তারেক রহমান আর বর্তমান তারেক রহমান এক জিনিস নয়। এমনটি মনে করেন দলের সিনিয়র নেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button