কুরবানীর জন্য উত্তরার কোন হাট ইজারা বরাদ্দ নিশ্চিত হয়নি

মুক্তমন রিপোর্ট : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অন্যতম এলাকা বৃহত্তর উত্তরা তথা খিলক্ষেত, বিমানবন্দর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, তুরাগ ও উত্তরা মডেল এলাকার জন্য অস্থায়ী ৪টি হাটের দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। তবে এখন পর্যন্ত একটি হাটেরও ইজারা বরাদ্দ চূড়ান্ত হয়নি। তবে ৩শ ফিটের মস্তুল চেকপোস্ট সংলগ্ন হাটের ইজারা নিশ্চিত হয়েছে।
ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে হওয়া হাটের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় ডিএনসিসি’র ৬টি অস্থায়ী হাটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এসেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও অনুমোদনের জন্য সুপারিশ প্রশাসকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল রোববারের মধ্যে হাটগুলোর ইজারাপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, ইজারাদার চূড়ান্ত হওয়া মস্তুল হাটটি ইজারা হয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ টাকায়। এই হাটের সরকারি দর ছিল ১ কোটি সাড়ে ৭ হাজার টাকা। হাটটির ইজারাদার সুরমি এন্টারপ্রাইজের মজিবুল্লাহ খন্দকার।
দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করা বাকি ৫টি হাটের মধ্যে ৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা সরকারি মূল্যের উত্তরা দিয়াবাড়ি হাটের জন্য দর পাওয়া গিয়েছিল ১০ কোটি ১ লাখ টাকা। দরটি দিয়েছিলেন এসএম ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তবে দরপত্রের শিডিউলের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি পে-অর্ডারের মূল কপির পরিবর্তে ফটোকপি জমা দিয়েছিলেন। এ নিয়ে দরপত্র খোলার দিন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা (৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা) চায়না বাংলা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা হট্টগোল করেন। এ হাটের বিষয়ে মূল্যায়ন কমিটিতে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি প্রশাসকের কাছে সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
১০ নম্বর সেক্টর–সংলগ্ন রানাভোলা অ্যাভিনিউ খালি জায়গার হাটের জন্য দর পাওয়া যায় ৯৫ লাখ ২১ হাজার টাকা। দরটি দিয়েছে আতিকুর রহমান অ্যান্ড কোং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সরকারি দর ছিল ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
প্রথম দফায় পরিকল্পনায় ঢাকা ১০টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে দুটি বাতিল হওয়ার পর নতুন আরও দুটি জায়গায় হাট বসাতে দরপত্র আহ্বান করে ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। এর একটি খিলক্ষেত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচের হাট, সরকারি দর ৫০ লাখ টাকা। এ হাটের জন্য ক্ল্যাসিক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান দর দিয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর কাঁককুড়া বাজার–সংলগ্ন রহমাননগর হাটের সরকারি দর ছিল ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ হাটের জন্য আরহাম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ১৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা দর দিয়েছে।
হাটগুলোর ইজারাদার নিয়োগে দেরি হওয়ায় হাট বসানোর প্রস্তুতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন দরপত্র দেওয়া ব্যক্তিরা। তারা বলছেন, হাটের প্রস্তুতির জন্য কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময়ের প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রচারণার বিষয় রয়েছে। সারা দেশের গবাদিপশুর ব্যবসায়ী কিংবা পাইকারদেরও জানানোর বিষয় রয়েছে।
আগামী ৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। রাজধানীতে পবিত্র ঈদুল আজহার চার দিন আগে হাট বসা শুরু হয়ে কোরবানির পশু কেনাবেচা গড়ায় ঈদের দিন পর্যন্ত। সেই হিসাবে কোরবানির হাট শুরু হওয়ার কথা ৩ জুন। তবে এখনো হাটগুলোর ইজারাদার নিয়োগ চূড়ান্ত না হওয়ায় বৃহত্তর উত্তরাবাসী রয়েছে চরম দুশ্চিন্তায়। তাছাড়া হাইকোর্টের
প্রথম দফায় ১০টি অস্থায়ী হাটের জন্য গত ২৯ এপ্রিল দরপত্র আহ্বান করেছিল ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দুটি হাট—বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং, আফতাবনগর ও খিলক্ষেত বনরূপা হাটের ইজারা উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাতিল হয়ে যায়। বাকি হাটগুলোর মধ্যে দুটি ছাড়া কোনো হাটের জন্য সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দর পাওয়া যায়নি।